[عربى] [বাংলা] [Dansk] [Deutsch] [English] [Español] [Français] [हिन्दी] [Italiano] [日本語] [한국어] [मराठी] [Polski] [Українською]
আমরা আশা করি, এই তথ্যগুলো কখনো বাস্তবে ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না, তবে যদি কখনো পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটে, সে ক্ষেত্রে সুরক্ষার জন্য উন্মুক্ত তথ্যগুলো ICRP একত্রিত করেছে এবং যুক্তরাজ্যের এসএজিই পাবলিশিংয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্বে ICRP Publication 146 Radiological Protection of People and the Environment in the Event of a Large Nuclear Accident immediately free to access প্রস্তুত করেছে। ইতোমধ্যে, ICRP Task Group 120 অন্যান্য বিকিরণ ও ক্ষতিকর বিষয়ে জরুরী সুরক্ষা নির্দেশিকা প্রস্তুত করেছে। |
প্রথম ১০ মিনিট প্রথম ২৪ ঘণ্টা ঝুঁকিগুলো অনুধাবন পরমাণু বিস্ফোরণের জন্য আপনি কীভাবে প্রস্তুত থাকবেন সতর্কতায় আপনার করণীয় |
একটি ছোটো বহনযোগ্য ডিভাইস অথবা কোনো মিসাইল হামলার মাধ্যমে যে পারমাণবিক বিস্ফোরণ হয়, তার ফলে ভয়ংকর রকমের প্রাণহানি ঘটতে পারে। পর্যাপ্ত প্রস্তুতি এবং পারমাণবিক সতর্কতায় অথবা বিস্ফোরণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আপনি নিজের এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য ও জীবনের সুরক্ষা দিতে পারেন। পারমাণবিক বিস্ফোরণের আগে, বিস্ফোরণের সময় কিংবা পরে আপনি ও আপনার পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষায় সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো ভবনের মাঝামাঝি স্থানে অথবা ভবনের বেজমেন্টে আশ্রয় নেওয়া। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট মি. ইজো নোমুরা হিরোসিমার একটি ভবনের বেজমেন্টে ছিলেন, যা ছিলো বিস্ফোরণ স্থান থেকে ১৭০ মিটার দূরত্বে। তিনি পারমাণবিক বোমা হামলা থেকে বেঁচে গেয়েছিলেন এবং ১৯৮২ সালে ৮৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান [ref]। বেশির ভাগ মানুষের, যারা পারমাণবিক বিস্ফোরণস্থলের কয়েকশ মিটারের মধ্যে থাকেন, তাদের বাঁচার সম্ভাবনা থাকে না, বিশেষত যদি তারা অপ্রস্তুত থাকেন।
পারমাণবিক বিস্ফোরণজাত তেজস্ক্রিয় ধূলিকণা (ফলআউট) পৌঁছানোর আগেই ঘরের ভেতরে আশ্রয় গ্রহণ করুন। বিস্ফোরণের পর তেজস্ক্রিয় ধূলিকণা পৌঁছানোর আগে একটি নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার জন্য আপনি ১০ মিনিট বা তার চেয়ে খানিকটা বেশি সময় পেতে পারেন। বিস্ফোরণের কয়েক মিনিটের মধ্যে যদি একটি বহুতল ভবন অথবা বেজমেন্টে নিরাপদে পৌঁছানো যায়, তাহলে তাৎক্ষণিক সেখানেই যান। এ ক্ষেত্রে কংক্রিট বা ইটের দেওয়াল সবচেয়ে নিরাপদ। মাটির নিচের গ্যারেজ এবং সাবওয়েও ভালো আশ্রয়স্থল হতে পারে।
পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর ভবনের ভিতরে অবস্থান নেয়াই সর্বোত্তম পন্থা। বাইরের তেজস্ক্রিয় উপাদান থেকে নিজের সুরক্ষায় হাতের কাছে যা পাবেন তা দিয়ে একটা আড়াল তৈরি করুন।
আপনার যদি মনে হয়, আপনি তেজস্ক্রিয় ধূলিকণার সংস্পর্শে এসেছেন, তাহলে দূষিত পোশাকের বাইরের স্তর ও জুতো খুলে ফেলতে হবে। উন্মুক্ত ত্বক ও চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি কোনো পোষা প্রাণি তেজস্ক্রিয় ধূলিকণার সংস্পর্শে আসে, তাহলে যেখানে মানুষজন নেই এমন একটি রুমে নিয়ে ঝেড়ে নিতে হবে। যদি সম্ভব হয় প্রাণীটিকে ধুয়ে নিন। আরও তথ্য পাওয়া যাবে এখানে এবং এখানে (ভিডিও)।
আপনার আশ্রয়স্থলে বা দোকানে সংরক্ষিত খাবার, পানীয় এবং ওষুধ ব্যবহারের জন্য নিরাপদ।
আপনার করণীয় সর্ম্পকে আপডেট তথ্য পাওয়ার জন্য সচল গণমাধ্যম সঙ্গে সংযুক্ত থাকুন। উদাহরণস্বরুপ, ব্যাটারি চালিত রেডিও দিয়ে এএম/এফএম রেডিও স্টেশনের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারেন। বিকল্প নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত ভবনের ভেতরেই থাকুন।
পতিত তেজস্ক্রিয় ধূলিকণা থেকে উদ্ভূত ঝুঁকি খুব দ্রুত কমে যায়। অন্য কোনো তাৎক্ষণিক বড় ঝুঁকি বা হুমকির সম্ভাবনা (অগ্নিকান্ড, গ্যাস লিকেজ, ভবন ধস অথবা মারাত্মক আহত) দেখা না দিলে কিংবা কর্তৃপক্ষের দ্বারা বাইরে বের হওয়াকে নিরাপদ ঘোষণা না করা হলে, ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা সুরক্ষিত এলাকায় (বেজমেন্ট অথবা বিশাল কোনো ভবনের কেন্দ্রে) অবস্থান করুন।
তেজস্ক্রিয় ধূলিকণা রয়েছে এমন এলাকা শনাক্ত করার আগে অথবা নিরাপদে স্থানান্তরের একটি পথ বের না হওয়া পর্যন্ত নিজে নিজেই দুর্ঘটনা কবলিত এলাকা থেকে সরে যাওয়া প্রবলভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়।
পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে, কীভাবে বাঁচতে হবে এবং কী করতে হবে সে সম্পর্কে আরও তথ্য এখানে পাওয়া যাবে। পাঁচ মিনিটের এই ভিডিওটি সাবটাইটেল সহ অনেক ভাষায় পাওয়া যাবে।
পারমাণবিক বিস্ফোরণের ঝুঁকিগুলো সর্ম্পকে ভালোমতো জানুুন, পরমাণু সর্তকর্তার জন্য প্রস্তুত থাকুন এবং বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ নিন। পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর কিছু ঝুঁকি নিচে উল্লেখ করা হলো:
দশ কিলোমিটার বা তারও বেশি দূরের একটি উজ্জ্বল আলোর ঝলক যা সাময়িকভাবে কারো চোখ অন্ধ করে দিতে পারে, তা পরমাণু বিস্ফোরণের একটি নির্দেশক হতে পারে।
থার্মাল পালস- বিস্ফোরণের পরপরই অত্যন্ত উত্তপ্ত গ্যাসের একটি অগ্নিগোলক থার্মাল পালস তৈরি করে। এটি কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হতে পারে যা চামড়া পুড়ে যাওয়া, চোখের ক্ষতি এবং দাহ্যপদার্থ যেমন গাছপালা বা কাঠের কাঠামোতে আগুনের সূত্রপাত ঘটাতে পারে।
ব্লাস্ট ওয়েভ- একটি অগ্নিগোলক শহরের কিছু অংশ ধ্বংস করে দিতে পারে এবং বিস্ফোরণের ঢেউ কয়েক কিলোমিটার দূরের ভবনের ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে। এমনকি কয়েক কিলোমিটার দূরেও ভাঙা জানালা এবং ধ্বংসাবশেষের উড়ন্ত টুকরো খুব বিপজ্জনক হতে পারে।
অগ্নিগোলক থেকে প্রাথমিক বিকিরণ: বিস্ফোরণস্থলের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে যারা ঘরের বাইরে থাকেন, অগ্নিগোলকের বিকিরণ তাদের আঘাত বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
তেজস্ক্রিয় ধূলিকণা থেকে অবশিষ্ট বিকিরণ: যদি বিস্ফোরণটি মাটির কাছাকাছি ঘটে, তবে বিস্ফোরণের ফলে উত্পাদিত তেজস্ক্রিয় উপাদান ময়লা এবং ধ্বংসাবশেষের সাথে মিশে যায়। অগ্নিগোলকটি এসব উপাদানকে বায়ুমণ্ডলে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ঊর্ধ্বে নিয়ে যায়। এসব উপাদান পরে একটি সময় ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। এসব উপাদানের পৃথিবীতে পৌঁছাতে এবং মাটিকে দূষিত করতে দশ মিনিট বা তার বেশি সময় লাগতে পারে। এরা বিস্ফোরণের পরের প্রথম কয়েকঘণ্টা সময়কে এবং বিস্ফোরণস্থলের দশ কিলোমিটারের মধ্যে এলাকাকে সবচেয়ে বিপজ্জনক করে তুলে।
ক্ষয়ক্ষতির আরেকটি কারন হলো তড়িৎচুম্বকীয় স্পন্দন (ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পালস)। এটি বিদ্যুৎ গ্রিড, টেলিকমিউনিকশেন নেটওয়ার্ক এবং বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে ভোল্টেজ বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে বিদ্যুৎ, কলের পানি এবং খাবার সরবরাহ কয়েক সপ্তাহ জন্য মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে। মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট সেবা, স্থানীয় টিভি এবং এফএম রেডিও স্টেশনও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দূরের এএম স্টেশনগুলো সচল থাকে।
বাড়িতে, কর্মক্ষেত্রে, স্কুলে এবং যাতায়াতের সময় সম্ভাব্য আশ্রয় স্থানগুলো সনাক্ত করুন। এ ক্ষেত্রে আপনার অফিস বা বাসার বেজমেন্টকে সবার আগে বিবেচনা করুন। কাছাকাছি ভবন, দোকান এবং ব্যবসা ক্ষেত্রে আশ্রয় নিন, বিশেষত যদি এগুলো মাটির নীচে হয়ে থাকে। যানবাহন ও ভ্রাম্যমাণ বাড়িগুলো সন্তোষজনক সুরক্ষা দেয় না।
আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নিচের জিনিসপত্রগুলো প্রস্তুত ও জমা রাখুন:
জখম বা পুড়ে গেলে চিকিৎসা দেওয়ার মতো ফার্স্ট এইড দক্ষতা গড়ে তুলুন।
পারমানবিক বিস্ফোরণের সময় আপনার করণীয় কি হবে সে সম্পর্কে আপনার বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একটি বোঝাপড়া করে নিন।
ছোটো বাচ্চাদের জামাকাপড়ে তাদের নাম-ঠিকানা জুড়ে দিন, যা তাদের আলাদা হলে খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
কাছাকাছি আশ্রয় খুঁজুন। বেজমেন্ট, ভূগর্ভস্থ পার্কিং, সাবওয়ে এবং আধুনিক ইটের অথবা কংক্রিটের তৈরি বড় ভবনের কেন্দ্রস্থল আপনাকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে পারে।
যদি বাইরে থাকেন
যদি ভবনের মধ্যে থাকেন
নিজেকে বিস্ফোরণ থেকে সুরক্ষিত রাখুন। আপনার যদি মনে হয় একটি বিস্ফোরণ হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে মেঝেতে শুয়ে পড়ুন। কোনো শক্ত বা দৃঢ় কিছুর নিচে আশ্রয় নিন। উড়ন্ত ধ্বংসাবশেষ বা অন্য কোনো আঘাত থেকে নিজের মাথা ও মুখের নিরাপত্তার জন্য তা আড়াল করুন বা ঢেকে রাখুন।